আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে সাড়ে চার বছর পর চট্টগ্রামের আনোয়ারা পারকি সৈকতে আটকে পড়া ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজটি কাটার কাজ শুরু করেছে মালিক পক্ষ।
২০১৭ সালের ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে নোঙর ছিঁড়ে পারকি সমুদ্র সৈকতে এসে আটকে পড়ে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার বাংলাদেশি মালিকানাধীন ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ নামের এই জাহাজটি। মালিক পক্ষ অনেক চেষ্টা করেও জাহাজটি সরিয়ে নিতে পারেনি। পরবর্তীকালে ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান জাহাজটি কিনে নেয়। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে তারা জাহাজটি কাটা শুরু করেছে।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজটি পারকি সমুদ্রসৈকত চরে আটকা পড়ে। প্রবল বাতাসের তোড়ে দিক হারিয়ে ও ইঞ্জিন বিকল পড়লে জাহাজটি চরে আটকে যায়। দীর্ঘদিন সৈকতে থাকার কারণে পারকি সৈকতের আধা কিলোমিটার অংশে পলি জমে আর গাছ উপড়ে পড়ে। এ কারণে জাহাজটি সরানোর দাবি জানায় বিভিন্ন সংগঠন। কিন্তু মামলাজনিত কারণে এটি কাটতে নিয়ে বিপাকে পড়ে। অবশেষে হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে জাহাজটি কাটা শুরু করলে ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ জাহাজ কাটার অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ’ কে দুই কোটি টাকা জরিমানা করার পর এতোদিন জাহাজটি কাটা বন্ধ ছিল।
পড়ুন: জাহাজ চলাচল বন্ধ, সেন্টমার্টিনে আটকা সহস্রাধিক পর্যটক
পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে শর্ত স্বাপেক্ষে জাহাজটি কাটার অনুমতি পায় ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ সংক্রান্ত একটি কমিটিও করে দেন পরিবেশ অধিদপ্তর।
ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মো. আমজাদ হোসেন জানান, দীর্ঘ আইনি জটিলতা শেষে আদালতের মাধ্যমেই আমরা জাহাজটি কাটার অনুমতি পেয়েছি। আদালত ও পরিবেশ অধিদপ্তরের শর্ত মেনেই জাহাজটি কাটার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। জাহাজটি কাটতে পরিবেশগত ক্ষতির জন্য আদালতের নির্দেশে পরিবেশ অধিদপ্তরকে দুই কোটি টাকা জরিমানা পরিশোধ করা হয়েছে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর পারকি সমুদ্র সৈকতে আটকে পড়া এমভি ক্রিস্টাল গোল্ড জাহাজটি নানা শর্তে কাটার অনুমতি প্রদান করেন। এই সংক্রান্ত ৭ সদস্যের গঠিত মনিটরিং কমিটিতে আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।